Breaking News
recent

শবে বরাত ও প্রাসংগিক কিছু কথা পর্ব*২



প্রাজ্ঞ আলেমগণ ব্যাপারে একমত যে, দুর্বল হাদীস দ্বারা কোন আহকাম- বিধান প্রমাণ করা যায় না দুর্বল হাদীসের উপর আমল করার জন্য কয়েকটি শর্ত লাগিয়েছেন তারা শর্তগুলো নিম্নরূপ
  • . হাদীসটির মূল বক্তব্য অন্য কোন সহীহ হাদীসের বিরোধীতা করবেনা, বরং কোন শুদ্ধ ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হতে হবে
  • . হাদীসটি একেবারেই দুর্বল অথবা বানোয়াট হলে চলবে না
  • . হাদীসটির উপর আমল করার সময় এটা রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে প্রমাণিত বলে বিশ্বাস করা যাবে না কারণ রাসূল থেকে প্রমাণিত বলে বিশ্বাস করলে রাসূলের উপর মিথ্যাচারিতার পাপ হবে, ফলে জাহান্নাম অবধারিত হয়ে পড়বে
  • . হাদীসটি ফাদায়িল তথা কোন আমলের ফযীলত বর্ণনা সংক্রান্ত হতে হবে আহকাম (ওয়াজিব, মুস্তাহাব, হারাম, মাকরূহ) ইত্যাদি সাব্যস্তকারী না হতে হবে
  • . বান্দা তার প্রভুর মাঝে একান্ত ব্যক্তিগত কোন আমলের ক্ষেত্রে হাদীসটির নির্ভরতা নেয়া যাবে তবে হাদীসের উপর আমল করার জন্য একে অপরকে আহবান করতে পারবে না
এই শর্তাবলীর আলোকে যদি উপরোক্ত হাদীসগুলো পরীক্ষা করে দেখি তাহলে দেখতে পাই যে, উপরোক্ত হাদীসসমূহের মধ্যে শেষোক্ত _ আলী  (রাদিয়াল্লাহু আনহু)বর্ণিতহাদীসটি বানোয়াট। সুতরাং তার উপর আমল করা উম্মাতের আলেমদের ঐক্যমতে জায়েয হবে না
প্রথম হাদীসটি দুর্বল, দ্বিতীয় হাদীসটিও অধিকাংশ আলেমের মতে দুর্বল, যদিও কোন-কোন আলেম এর বর্ণনাকারীগণকে শক্তিশালী বলে মত প্রকাশ করেছেন। কিন্তু কেবলমাত্র বর্ণনাকারী শক্তিশালী হলেই হাদীস বিশুদ্ধ হওয়া সাব্যস্ত হয়না
মোট কথাঃ প্রথম দ্বিতীয়, হাদীস দুটি দুর্বল। খুব দুর্বল বা বানোয়াট নয়। সে হিসেবে যৎকিঞ্চিৎ প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে যে রাত্রির ফযীলত রয়েছে
এই সূত্রেই অনেক হাদীসবিদ শাবানের মধ্যরাতের ফযীলত রয়েছে বলে মত প্রকাশ করেছেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেনঃ



  • ইমাম আহমাদ (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) [ইবনে তাইমিয়া তার ইকতিদায়ে ছিরাতে মুস্তাকীমে (/৬২৬) তা উল্লেখ করেছেন]
  • ইমাম আওযায়ী (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) [ইমাম ইবনে রাজাব তারলাতায়েফুল মাআরিফগ্রন্থে (পৃঃ১৪৪) তার থেকে তা বর্ণনা করেছেন]
  • শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) [ইকতিদায়ে ছিরাতে মুস্তাকীম /৬২৬,৬২৭, মাজমুফাতাওয়া ২৩/১২৩, ১৩১,১৩৩,১৩৪]
  • ইমাম ইবনে রাজাব আল হাম্বলী (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) [তার লাতায়েফুল মাআরিফ পৃঃ১৪৪ দ্রষ্টব্য]
  • প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস আল্লামা নাসিরুদ্দিন আল-আলবানী (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) [ছিলছিলাতুল আহাদীস আস্সাহীহা /১৩৫-১৩৯]
উপরোক্ত মুহাদ্দিসগনসহ আরো অনেকে রাত্রিকে ফযীলতের রাত বলে মত প্রকাশ করেছেন
কিন্তু আমরা যদি উপরে উল্লিখিত প্রথম দ্বিতীয় হাদীসটি পাঠ করে দেখি তাহলে দেখতে পাবআল্লাহ  তাআলা নিকটবর্তী আসমানে অবতীর্ণ হয়ে তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনার আহবান জানাতে  থাকেনহাদীসদ্বয়ে বক্তব্যই উপস্থাপিত হয়েছে। মুলত সহীহ হাদীসে সুস্পষ্ট এসেছে যে, “আল্লাহ তাআলা প্রতি রাতের শেষাংশেশেষ তৃতীয়াংশে- নিকটবর্তী আসমানে অবতীর্ণ হয়ে আহবান জানাতে থাকেনএমন কেউ কি আছে যে আমাকে ডাকবে আর আমি তার ডাকে সাড়া দেব? এমন কেউ কি আছে যে আমার কাছে কিছু চাইবে আর আমি তাকে দেব? আমার কাছে ক্ষমা চাইবে আর আমি তাকে ক্ষমা করে দেব?”  [বুখারী, হাদীস নং ১১৪৫, মুসলিম হাদীস নং ৭৫৮]
সুতরাং আমরা হাদীসদ্বয়ে অতিরিক্ত কোন কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। সুতরাং রাত্রির বিশেষ কোন বিশেষত্ব আমাদের নজরে পড়ছে না। এজন্যই শাইখ আব্দুল আজীজ ইবনে বায (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) সহ আরো অনেকে রাত্রির অতিরিক্ত ফযীলত অস্বীকার করেছেন
রাত্রি উদযাপন এতদসংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর


To see next part of next post


Md Abu Raihan Siddik

Md Abu Raihan Siddik

No comments:

Post a Comment

Powered by Blogger.